বিনির্মাণ, দর্শন ও সাহিত্য: জাক দেরিদার পাঠ

বিনির্মাণ (Deconstruction) বিষয়টা কী? সহজ কথায়, এটা হলো দর্শন ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার বহু পুরনো ধারণাগুলোকে একেবারে গোড়া থেকে নাড়িয়ে দেওয়ার একটা চেষ্টা। এই লেখাটার শুরুতেই আমরা দেখব বিনির্মাণের দার্শনিক ভিত্তিগুলো কী, বিশেষ করে জাক দেরিদার (Jacques Derrida) দৃষ্টিভঙ্গি আর তাঁর কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা করব। তারপর আমরা জোনাথন কালার (Jonathan Culler), (রুডল্ফ) গাশে (Rodolphe Gasché), ইয়ুর্গেন হাবরমাস (Jürgen Habermas), ক্রিস্টোফার নরিস (Christopher Norris), রিচার্ড রোর্টি (Richard Rorty) এবং জন সার্লের (John Searle) মতো বড় বড় সমালোচকদের নানা রকম মতামত তুলে ধরব। বাক্‌কেন্দ্রিক

অনেকে মনে করেন বিনির্মাণ এক ধরনের অতীন্দ্রিয় (transcendental) বা বৈজ্ঞানিক (scientistic) তত্ত্ব। কিন্তু আমরা দেখানোর চেষ্টা করব, ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। তার মানে এই না যে, বিনির্মাণের কোনো মূল্য নেই। বরং যেকোনো আলোচনা, তা ব্যক্তিগত হোক বা সামাজিক, তাকে প্রশ্ন করার এবং ব্যবচ্ছেদ করার এক অসাধারণ কৌশল হিসেবে বিনির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শুরুর কথা

বিনির্মাণ হলো দর্শন ও সমালোচনার লক্ষ্য এবং প্রকৃতি নিয়ে আমাদের পুরনো ধারণাগুলোর ওপর এক চরম আঘাত। এর মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দর্শন আর সাহিত্যের সম্পর্ক। পল ডি ম্যান (Paul de Man) বিষয়টা খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন:

“সমালোচনামূলক বিনির্মাণ করতে গিয়ে আমরা আবিষ্কার করি যে, দর্শনের সত্যের দাবিটা আসলে সাহিত্যিক এবং আলংকারিক… সাহিত্যই হয়ে ওঠে দর্শনের মূল বিষয় এবং সেই সত্যের মডেল, যার দিকে দর্শন পৌঁছাতে চায়… দর্শন যেন সাহিত্যের হাতে নিজের ধ্বংসের এক অন্তহীন প্রতিফলনে পরিণত হয়… সবচেয়ে কঠিন যা মেনে নেওয়া, তা হলো, ভুলের এই রূপকই আসলে দার্শনিক কঠোরতার আসল মডেল।” (de Man 1979: 115, 118)

save
Please login to bookmark Close

Leave a Comment

Scroll to Top

Explore Categorys

Explore pages